কোন দিকে যাচ্ছে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক?

1
4K

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক হিমশীতল অবস্থায় পৌঁছেছে। এখন নতুন করে সংখ্যালঘু ইস্যু তুলে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কেও টানোপোড়ন দেখা দিয়েছে। 

পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ঘোলাটে হয় চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের পর। তাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ভারতের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। 

শুধু প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ বসে থাকেনি। ঘটনার একদিন পর ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে ক্ষোভ জানায় ঢাকা। 

বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারতও গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছে। এছাড়া হামলার ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ভারত এবং তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করেছে। 

নতুন করে দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে উত্তেজনার পেছনে কারণ কী?

চিন্ময় দাসকে গ্রেফতার ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির সবশেষ ঘটনা। তবে এটি শুরু হয় শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে। বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের অবৈধ ক্ষমতার প্রধান সমর্থক ছিল ভারত। এই সময়ে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। 

 

তবে আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে ভারত বিরোধীতা বেড়েছে। কারণ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। আর সেখানে বসেই শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে। বুধবার ড. ইউনূসকে গণহত্যার ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে আগুন ঢেলেছেন হাসিনা।

আগস্টের পর শেখ হাসিনা প্রথম পাবলিক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজকে আমি গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইউনূস গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। পরিকল্পিতভাবে তিনি এটি বাস্তবায়ন করেছে।’

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবনতি শুরু হয় যখন ড. ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কথা বলেন। গত মাসে ইউনূস বলেছিলেন, পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা হবে। 

পরবর্তীতে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে নয়া দিল্লির উদ্বেগ প্রকাশ ঢাকাকে আরও ক্ষুদ্ধ করেছে। 

বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলবে?

এ বিষয়ে নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মুবাশ্বর হাসান বলেন, বাংলাদেশের হাইকমিশনের হামলা ঘটনা অবশ্যই গভীর চিন্তার বিষয়ে। বিশেষ করে দুই দেশের সম্পর্কের দিক দিয়ে। 

আল জাজিরাকে তিনি বলেন, আগের সরকারের সময় দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল বর্তমানে তাতে পুরোপুরি ছেদ পড়েছে। প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে এখন বিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যা বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য পরিস্থিতির ওপর আমাদের নজর রাখতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে কী হয়। 

শেখ হাসিনার সময় ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ। যার ফলে ২০২৩-২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১৪ বিলিয়ন ডলার। 

গত মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করেন ঢাকায় নিযুক্ত প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, একটি এজেন্ডার ওপর ভিত্তি করে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক চলতে পারে না। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে ভার্মাকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ভারত অবশ্যই বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এক্ষেত্রে শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে হবে। 

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ভারতীয় সাবেক কূটনীতিক অনিল ত্রিগুনায়াত বাংলাদেশের সহকারী হাইকশিনে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক হবে যখন জনগণের মানসিকতায় পরিবর্তন ঘটবে। 

 

সূত্র: আলজাজিরা

 

Patrocinado
Pesquisar
Categorias
Leia Mais
রাজনীতি
প্রধান উপদেষ্টা যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আজকে বসলাম এ জন্য পত্র-পত্রিকায় দেখছি,...
Por Bd Live24 2024-12-06 05:11:03 0 5K
Outro
that is the creator of a certain Golden Goose kind of divine chaos
works out of a studio in Monterrey, in the same building that his dad, siblings, and grandpa grew...
Por Savannah Benjamin 2025-03-06 07:30:40 0 2K
সারাদেশ
Earth Cup: Charlotte FC star Karol Swiderski helps make Poland roster
The game major point awaits oneself, Karol Swiderski. Charlotte FC star in advance is element of...
Por Puoch McDavids 2025-03-25 01:37:10 0 2K